স্বামী কর্তৃক স্ত্রী ধর্ষিতা!!!!!!
লিখেছেন লিখেছেন আলো আঁধারি ১১ জুন, ২০১৪, ০৬:৫৮:১৯ সন্ধ্যা
প্রায় ১বছর আগে এক পত্রিকার নারী বিষয়ক কলামে একটা লেখা পড়েছিলাম। যেখানে নারীদের বিভিন্ন রকম নির্যাতনের কথা বলে হয়েছিল। এক পর্যায়ে লেখিকা বলেন, " কত নারী যে স্বামী কর্তৃকও নির্যাতিত হয় তার খবর কয়জন রাখে? " লেখাটা পড়ে মনটা খারাপ হয়ে গেছিল। আসলেইতো স্ত্রীর ইচ্ছের বিরুদ্ধে তার সাথে জোর করে রাত কাটানোওতো ধর্ষনেরই মত। এরপর থেকে গত এক বছরে এরকম কিছু আর চোখে পড়েনি তাই আর ভাবিওনি এটা নিয়ে। আজ দুটো জায়গায় লেখাটা চোখে পড়ল। এক পেইজে তথাকথিত নারী স্বাধীনতার কথা বলতে গিয়ে এক ব্যক্তি ঐ একই কথা বলেন যে " কত নারীইতো স্বামী কর্তৃক ধর্ষিতা।" আরেকটা অনলাইন পত্রিকায় শাঈখ ডঃ আবু আমিনাহ বিলাল ফিলিপসের ব্যাপারে নেগেটিভ ধারনা দিতে গিয়ে পত্রিকাটি লিখে যে শাঈখ বলেছেন ইসলামে স্বামী কর্তৃক স্ত্রী ধর্ষন বলে কিছু নেই। তখনি চমকে উঠলাম। ঠিকইতো শাঈখতো ভুল বলেননি তবে এই কথাটা এত বেশী প্রচার পাচ্ছে কেন?? আমার স্বল্প জ্ঞানে সামান্য ব্যাখ্যা মনে আসলো। দুটো কারনে নারীবাদীরা এটা প্রচার করছে। ১. সংসারে অশান্তি সৃষ্টি করে বিবাহিত নারীদের ক্ষেপিয়ে তোলা, ২. পরকীয়া, ব্যভিচার, নিষিদ্ধ প্রেমের বৈধতা দেয়া। প্রথমটার যদি ব্যাখ্যা দিতে যাই তাহলে দেখুন, একজন বিবাহিত নারী যখন কথাটা শুনবে তার মনে হবে আসলেইতো আমাকেতো জোর করা আমার ইচ্ছের বিরুদ্ধে স্বামীর কাছে নিজেকে সপে দেয়া ঠিক না। এটাতো ধর্ষনের মতই। এই শুরু হয়ে গেল স্বামীর সাথে তার ঝগড়া, অশান্তি। তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে স্বামী যেন তাকে জোর না করে। বেচারা স্বামী আর তখন কি করবে?? তারতো চাহিদা মেটাতেই হবে, সে তখন বউয়ের কাছ থেকে না পেয়ে অন্য উপায়ে মেটানোর চেষ্টাা করবে। যাকে বলে পরকীয়া। অপর দিকে স্ত্রী ভাববে স্বামী বেটাকে আমার ভালো লাগেনা যাকে ভালো লাগে তার কাছে যাব। এটা আমার স্বাধীনতা। এভাবে শুরু হয়ে যাবে পরকীয়া, ব্যভিচারের মহামারী। আরে এটা কি অন্যায় নাকি??? তারাতো তাদের মন যা চাইছে তাই করছে, কেউতো জোর করছেনা, ঐ যে নাটক, সিনেমায় দেখায়না? নাউযুবিল্লাহ। একটা কথার ব্যাপক প্রচার যে কতটা ভয়ংকর পরিনতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছি আমরা ভাবলেই শিউরে উঠছি। আদৌ যে কথাটার কোন ভিত্তিই নেই। ধর্মীয় দৃষ্টিকোন, সামাজিক দৃষ্টিকোন কোনদিক দিয়েই এটি ঠিক নয়। ইসলামে স্বামী স্ত্রীর বিষয়ে একটা চমৎকার হাদীস পড়েছিলাম, স্বামী এবং স্ত্রী যখন পরস্পরের দিকে ভালোবাসার দৃষ্টিতে তাকায় তখন আল্লাহও তাদের প্রতি ভালোবাসার দৃষ্টিতে তাকান। (দলীল মনে নেই বলে দুঃখিত) সুবহানাল্লাহ কত সুন্দর কথা। বিয়ে হচ্ছে দুজনের চাহিদা ইচ্ছা ভালোবাসা শেয়ারিং এরমাধ্যমে একটা শান্তিময় পরিবেশ সৃষ্টির চেষ্টা করা। এখানে দুজনকেই দুজনের চাহিদা বুঝতে হবে। জোর জবরদস্তি অশান্তি ইসলাম সমর্থন করেনা। আল্লাহ আমাদের জীবনকে অশান্তিময় করার গভীর চক্রান্ত থেকে হেফাজত করুন। আমিন।
বিষয়: বিবিধ
২০৩৩ বার পঠিত, ১৫ টি মন্তব্য
পাঠকের মন্তব্য:
ইসলামপন্থীরা নারীদের নিয়ে এখনই বিকল্প ইনিশিয়েটিভ না নিলে সম্ভাব্য ঝড় ঠেকানো যাবেনা।
নারীবাদীদের সব কিছুকে-ই ঢালাওভাবে নেতিবাচক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখার দরকার নাই । বিবাহিত জীবনে কদাচিৎ জোরপূর্বকভাবে কৃত যৌনমিলনকে ধর্ষণের আওতায় ফেলা ঠিক না হলে-ও সেটা অবশ্য-ই এক ধরণের জুলুমের শামিল । এতে কোনো সন্দেহ থাকার কথা নয় ।
এ ব্যাপারে আমি এখানে দুটি বাস্তব উদাহরণ উপস্থাপন করবোঃ
১) এক বাংলাদেশী প্রকৌশলীকে জানি যার স্ত্রী ভয়াবহ রক্ত-রোগে আক্রান্ত । দ্বিতীয় বাচ্চা নিতে ডাক্তার নিষেধ করা সত্ত্বেও মহিলা স্বামীর পীড়াপীড়িতে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সন্তান ধারণ করেছেন । বাচ্চা জন্ম দেবার পর থেকে তার সমস্যা যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে (প্রতি সপ্তাহে-ই রক্ত পরীক্ষা করাতে করাতে তার বাহুতে ঘা হবার জোগাড়) তেমনি বাচ্চা-ও বিশেষ রোগে আক্রান্ত । এখন স্বামী আরো চারটি কণ্যা সন্তান নেবার জন্য স্ত্রী-কে চাপ দিচ্ছেন । মরার উপর খাঁড়ার ঘা যাকে বলে ! স্ত্রীর কি এখানে প্রজননের অধিকার নিশ্চিত করা দরকার নেই ? শুধুমাত্র স্বামীর সিদ্ধান্তে-ই সন্তান জন্ম দেয়া হবে ?
২) এক পাকিস্তানী দম্পতির পাঁচটি সন্তান আছে । স্ত্রী কিডনী ও অন্যান্য জটিল রোগে আক্রান্ত । ডাক্তারের নিষেধ সত্ত্বেও স্বামী স্ত্রী-কে বাধ্য করেছেন আরো সন্তান নিতে । পরিণামে যা হবার তা হতে চলেছে । এখানে-ও কি মহিলার জন্য প্রজননের ক্ষেত্রে অধিকার সংরক্ষিত থাকা দরকার নয় ?
নারীবাদীরা এ সমস্ত ব্যাপারে-ই প্রজননের ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করতে চায় । কিন্তু ইসলামপন্থীরা মনে হয় ব্যাপারটিকে সঠিকভাবে বুঝতে চেষ্টা করছেন না । দু'পক্ষের মধ্যে এভাবে বিরাজ করছে সাপ-নেউলে অবস্থা । দু'পক্ষ-ই বিভিন্ন ব্যাপারে তাদের অবস্থানকে পরস্পরের কাছে তুলে ধরছেন না ; এতে বেড়ে চলেছেন দূরত্ব ।
চরম সুন্দর কথা।
তারা ইসলামী শরিয়তে নিজেরা দেনমোহর স হ যা কিছু পাবার তা নেয় , কিন্তু তাকেও যে দিতে হয় বা দেবার মত মানসিকতা থাকতে হয় - সেটার প্রসঙ্গ আসলে ইচ্ছে অনিচ্ছার বাহানা আনে ।
েসব কথা মাথায় আনার আগে তার কি এটা মনে আসে না যে এটা বয় ফ্রেন্ড বা পাড়ার রোমিও বা শিক্ষক কর্তৃক জোর পূর্বক হারাম সেক্স নয় । তার স্বামী শরিয়ত মেনে রেজিস্ট্রি করে সেটা হালাল নিয়েছে তারই সন্মতিক্রমে ।।
এখন স্বামী যদি স্ত্রীর আবদারকে তার উপর অহেতুক জুলুম মনে করে এবং এই বলে প্রচার করে যে এটা যেহেতু তার অসন্মতি বা ইচ্ছের বিরুদ্ধে হচ্ছে এটা স্রেফ ডাকাতি ছাড়া আর কিছু নয় । আজীবন একসাথে থাকার যে বন্ধন , সেখানে এসব কথা শুনলে কি মেয়েদের ভাল লাগবে যদি স্বামীর সেক্সকে সে ধর্ষন বলে মনে করে ।
একজন স্ত্রী তার স্বামীর কাছ থেকে তার সারা জীবনের ভরনপোষনের দাবিদার ।
কি দিতে পারে একজন স্ত্রী তার স্বামীকে সেক্স ছাড়া । আর এটা চাইতে গেলেও ধর্ষন করছে শুনতে হয় ।
নিজেদের প্রাপ্যের ব্যাপারে মেয়েরা একেবারে আপোষহীন কোন সময় ষোল আনার উপর ৩২ আনা আদায় করে ছাড়ে । আর ছেলেদের ন্যায্য চাওয়ার প্রসঙ্গ আসলে সেটাকে কিভাবে অন্যায় প্রমান যায় তার তালে থাকে
প্রতারক (দজ্জাল) প্রতারনা করবে - দূর্ভাগ্য এই যে আজকের যুগের মেয়েরা সেই প্রতারকের অন্যতম টার্গেট এবং দূর্ভাগ্যক্রমে প্রতারক এর সাফল্য অনেক অনেক বেশী - কারন প্রতারককে কাউন্টার দেবার মত শক্তি মানুষদের মধ্যে নেই। ধন্যবাদ।
মন্তব্য করতে লগইন করুন